MMonir Trainer 2 years ago |
ন্যানো টেকনোলজি কি? | what is Nanotechnology?
ন্যানো টেকনোলজি হচ্ছে পদার্থকে পারমাণবিক আণবিক পর্যায়ে পরিবর্তন ও নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ব্যবহার করা হয়। সাধারণত চিকিৎসা ক্ষেত্রে এবং শক্তি উৎপাদন ক্ষেত্রগুলোতে Nanotechnology পরিবর্তন আনতে পারে।
ন্যানো হচ্ছে গ্রিক শব্দ। আক্ষরিক অর্থ অর্থ হচ্ছে সূক্ষ্ম বা ছোট বা ক্ষুদ্র। ন্যানো টেকনোলজির মাধ্যমে অতি ক্ষুদ্র পদার্থকে বিশ্লেষণ করা যায়। এছাড়াও প্রযুক্তির প্রয়োগ করে বিজ্ঞান 10 মিটার চেয়ে ছোট কণা নিয়ে কাজ করেছে।
ন্যানো প্রযুক্তি অণু ও পরমাণুর প্রকৌশল পদার্থবিজ্ঞান জীববিজ্ঞান জৈবপ্রযুক্তি এবং রসায়ন সম্পর্কিত বিষয় গুলোকে একত্র করে থাকে। কারণ দিনদিন প্রযুক্তির অগ্রসর হচ্ছে। ইঞ্জিনের প্রযুক্তিগুলো সাহায্যে এখন ঘর্ষণ হয় যার ফলে মেশিনের জীবন দীর্ঘমেয়াদি হয় এবং জ্বালানি খরচ কম হতে থাকে।
ন্যানো টেকনোলজি কাকে বলে?
সহজ কথায় বলতে গেলে, যখন নির্দিষ্ট কোন পদার্থ কে আণবিক এবং পারমাণবিক পর্যায়ে পরিবর্তন সহো, সেই পদার্থের নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এবং এ কাজ টি করার জন্য যে টেকনোলজির ব্যবহার করা হয়। তাকে বলা হয়, ন্যানো টেকনোলজি। আর আপনার জেনে রাখা উচিত যে। ন্যানো শব্দটি হল একটি গ্রিক শব্দ। এবং এই গ্রিক শব্দের অর্থে খুব সূক্ষ্ম কিংবা ছোট বস্তুকে নির্দেশ করে থাকে। আর আপনি যদি ন্যানো কে পদার্থের দিক থেকে লক্ষ্য করেন। তাহলে আপনি দেখতে পারবেন যে। ন্যানো খুব সূক্ষ্ম আকৃতির উপাদান তৈরি করে থাকে।
ন্যানো টেকনোলজি জনক কে?
ন্যানো টেকনোলজির জনক হচ্ছেন আমেরিকান পদার্থবিদ রিচার্ড ফাইনম্যান। ১৯৫৯ সাল ২৯ ডিসেম্বর তারিখে এক আলোচনায় সর্বপ্রথম এই Nanotechnology সম্পর্কে ধারণা দেন।
তিনি আরো ব্যক্ত করেন যে, ১ মিটার এর ১০০কোটি ভাগের এক ভাগ হচ্ছে ১ ন্যানোমিটার। আর এই এক ন্যানো মিটার এর সাথে যে সকল টেকনোলজি সংযুক্ত রয়েছে সেগুলো কে Nanotechnology ন্যানো প্রযুক্তি বলে।
আর এই ন্যানো প্রযুক্তি পরিচালনা করে থাকে বিজ্ঞান এবং প্রকৌশল বিভাগ। তাছাড়া ন্যানো স্কেলে ১ থেকে ১০০ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। Nanotechnology পদার্থকে আণবিক পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণ এবং পরিবর্তন করার বিদ্যা। অনেকে আবার এই ন্যানো টেকনোলজিকে ন্যানোটেক বলে থাকে।
ন্যানো টেকনোলজির সুবিধা
ন্যানোটেকনোলজির অনেক সুবিধা রয়েছে। নিম্নে আপনাদের জন্য আমরা কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা তুলে ধরলাম যাতে করে আপনারা সহজে বুঝতে পারে Nanotechnology আমাদের জন্য কতটা উপযোগী।
Nanotechnology ধারা তৈরিকৃত ব্যাটারি, ফুয়েল সেল, সোলার সেল ইত্যাদির মাধ্যমে সৌরশক্তিকে অধিকতর কাজে লাগানো যায়।
Nanotechnology সব সময় স্থায়ী, মজবুত ও টেকসই এবং আকারে ছোট পণ্য তৈরি করে থাকে।
টেকনোলজির মাধ্যমে খাদ্য দ্রব্য সিলভার তৈরীর কাজে ব্যবহৃত হয়।
Nanotechnology প্রয়োগের ফলে উৎপাদিত ঔষধ ব্যবহার করে দ্রুত আরোগ্য লাভ করা যায়।
ইলেকট্রিক শিল্পের বৈতালিক পরিবর্তন আনা যায় ( যেমনঃ- ন্যানো ট্রানজিস্টর, প্লাজমা ডিসপ্লে, ন্যানো ডায়োড ইত্যাদি)।
Nanotechnology ব্যবহার করে মহাকাশের নানা রকম যন্ত্রপাতি উৎপাদন করা হয়।
Nanotechnology রোবট তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
কম্পিউটার হার্ডওয়ার তৈরিতে Nanotechnology উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।
ন্যানো টেকনোলজির অসুবিধা
ন্যানো টেকনোলজির সুবিধা থেকে অসুবিধার পরিমাণ অধিকতর কম। কারণ ন্যানোটেকনোলজি আমাদের জীবনকে আরও সহজ করে তুলেছে। তাই এর সুবিধা অধিক পরিমাণে বিদ্যমান। কিন্তু এর কিছু অসুবিধা রয়েছে যা খুবই নগণ্য।
ন্যানো পার্টিকেল নামক পদার্থ মানুষের শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
Nanotechnology তুলনামূলকভাবে ব্যয়বহুল হয়।
ন্যানো টেকনোলজির ব্যবহার!
এতক্ষণের আলোচনা থেকে আপনি জানতে পারলেন যে, ন্যানো টেকনোলজি কি। আশা করি এই আলোচনা থেকে ন্যানো টেকনোলজি কি সে সম্পর্কে আপনার পরিষ্কার ধারণা চলে এসেছে। আর আপনি যাতে করে এই টেকনোলজি সম্পর্কে আরো বিভিন্ন বিষয় জানতে পারেন। সে কারণে এবার আমি আপনাকে ন্যানো টেকনোলজির ব্যবহার জানিয়ে দিব। মূলত এমন কোন কোন কাজ রয়েছে, যে কাজ গুলো তে এই ধরনের ন্যানো টেকনোলজির ব্যবহার হয়। সে সম্পর্কে এবার আমি আপনাকে জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। চলুন এবার তাহলে ন্যানো টেকনোলজির ব্যবহার সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
কম্পিউটার হার্ডওয়ার তৈরি করতে ন্যানো টেকনোলজি
আপনি জানলে অবাক হয়ে যাবেন যে, কম্পিউটারের হার্ডওয়ার তৈরি করার জন্য ন্যানো টেকনোলজির ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কেননা আমরা বেশ ভালো করেই জানি যে। একটি কম্পিউটারের মধ্যে প্রসেসর থাকে। এবং এই প্রসেসর মূলত বিভিন্ন প্রকারের অসংখ্য ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ন্যানোমিটার স্কেলের সমন্বয়ে গঠিত এক ধরনের বিশেষ সার্কিট। আর এই ধরনের বিশেষ সার্কিট তৈরি করার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে, ন্যানো টেকনোলজি।
মহাকাশ অভিযানে ন্যানো টেকনোলজির ব্যবহার
আমরা বেশ ভালো করে জানি, যে সকল মানুষ মহাকাশ অভিযান করে। তারা সর্বদা চেষ্টা করে যেন তাদের যাবতীয় বস্তুগুলো ওজনে হালকা হয়। আর এই ধরনের প্রয়োজনীয় বস্তু গুলো কে। হালকা করার জন্য ন্যানো টেকনোলজির অবদান অপরিসীম। মূলত সেদিক থেকে বিবেচনা করলে আমরা দেখতে পারবো যে। মহাকাশ অভিযানের ক্ষেত্রে ন্যানো টেকনোলজির ব্যবহার হয়ে থাকে।
বাতাস পরিশোধন করতে ন্যানো টেকনোলজি
সময়ের সাথে সাথে শিল্প কারখানার পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলে শিল্প কারখানার ধোঁয়া বাতাসের সাথে মিশে, বাতাস কে দূষিত করছে। কিন্তু বিশেষ এক প্রযুক্তির মাধ্যমে এই ধরনের বাতাস কে পরিশোধন করা যায়। আর যে প্রযুক্তির মাধ্যমে এই ধরনের বাতাস পরিশোধন করা হয়। সেই প্রযুক্তি গুলো তৈরি করতে ন্যানো টেকনোলজির ব্যবহার হয়ে থাকে।
কৃত্রিম অঙ্গ তৈরিতে ন্যানো টেকনোলজির
দুর্ঘটনা বশত কিংবা অসাবধানতার কারণে যখন একটি মানুষ তার শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হারিয়ে ফেলে। তখন সে মানুষটি বাকিটা জীবন সেই বিকলাঙ্গ তার মতই কাটিয়ে দেয়। কিন্তু উন্নত প্রযুক্তির কারণে বর্তমান সময়ে মানুষের বিভিন্ন কৃত্রিম অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তৈরি করা হয়ে থাকে। আর এই ধরনের কৃত্রিম অঙ্গ প্রত্যঙ্গ তৈরি করার জন্য ন্যানো টেকনোলজির ব্যবহার হয়ে থাকে।
বস্ত্রশিল্পে ন্যানো টেকনোলজির ব্যবহার
বস্ত্র হলো আমাদের মৌলিক চাহিদা গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি অংশ। আর বর্তমান সময়ে এই বস্ত্রের চাহিদার উপর নির্ভর করে ন্যানো টেকনোলজির ব্যবহার হয়ে আসছে। কারণ বস্ত্র শিল্পের যে কাপড় ব্যবহার করা হয়। সেই কাপড়ের ঘনত্ব এবং ওজন ঠিক রাখার জন্য। এই ধরনের ন্যানো টেকনোলজি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পেরেছে।
খেলাধুলা সামগ্রী তৈরিতে ন্যানো টেকনোলজি
আমরা বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা করে থাকি। তবে এই খেলাধুলার মধ্যে কিছু খেলা রয়েছে। যে খেলার সামগ্রী তৈরি করার জন্য ন্যানো টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যেমন, আপনি অবশ্যই টেনিস বল দেখে থাকবেন। মূলত এই ধরনের টেনিস বল এর স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করার জন্য। ন্যানো টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর পাশাপাশি গলফ বল এর ক্ষেত্রে ন্যানো টেকনোলজির ব্যবহার হয়। র্যাকেট এর শক্তি এবং স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করার জন্য। এই ধরনের ন্যানো টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতি তৈরি করার জন্য
বর্তমান সময়ে ইলেকট্রনিক্স প্রযুক্তির ফলে মানুষ আধুনিক হতে পেরেছে। যার কারণে মানুষ এখনো বিভিন্ন প্রকারের ইলেকট্রনিক্স পণ্য ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু এই ধরনের ইলেকট্রনিক্স পণ্য গুলো তৈরি করার সময়। ন্যানো টেকনোলজির ব্যবহার হয়ে থাকে। মূলত ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতি তে ন্যানো টেকনোলজি ব্যবহার করলে। সেই যন্ত্রপাতি গুলো আকারের দিক থেকে অনেক ছোট হবে। এর পাশাপাশি সেই যন্ত্র গুলো ওজনের দিক থেকে হালকা হবে।
ন্যানো টেকনোলজি কি FAQ
Q: ন্যানো টেকনোলজি এর সূচনা হয় কত সালে?
A: আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল থেকে আপনি জানতে পেরেছেন ন্যানো টেকনোলজি কি। তবে আপনি কি জানেন, ন্যানো টেকনোলজি এর সূচনা হয় কত সালে। যদি আপনি না জেনে থাকেন তাহলে শুনুন। সময়টা ছিল ১৭৯৩ সাল সে সময়ে আইন করার মাধ্যমে ন্যানো টেকনোলজি এর অগ্রযাত্রা শুরু হয়।
Q: ন্যানো টেকনোলজির ব্যবহার সম্পর্কে লিখুন?
A: বর্তমান সময়ে ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস এবং কম্পিউটার ডিভাইস গুলোর ক্ষেত্রে ন্যানো টেকনোলজির ব্যবহার হয়ে থাকে। কারণ এই ধরনের ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস গুলো যখন তৈরি করা হয়। তখন বিভিন্ন ধরনের সার্কিট এর প্রয়োজন হয়। আর এই ধরনের সার্কিট গুলো তে ন্যানো টেকনোলজির ব্যবহার লক্ষ্য করা করতে পারবেন।
উপসংহার: আমাদের এই আর্টিকেল থেকে আপনারা Nanotechnology সম্পর্কে জানতে পেরে উপকৃত হয়েছেন আশা করতে পারি। কারণ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের যত প্রযুক্তি রয়েছে এসে প্রযুক্তি কোন না কোন বিষয় ন্যানো টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়। কারণ বর্তমানে আমরা ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর আবিষ্কার কে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে। এছাড়াও আপনারা যদি Nanotechnology সম্পর্কে আরো জানতে চান তাহলে কমেন্ট বক্সে এসে আপনাদের মন্তব্য জানাতে পারেন।
Alert message goes here