Forum
24
bd

















1. First of all registration here 2. Then Click on Be a trainer or writer button 3. Collect your trainer or writer id card from trainer master 4. And create post here for earn money! 5. For trainer 100 tk minimum withdraw 6. For writer 500 tk minimum withdraw 7. Payment method Bkash Only
obaydulbc obaydulbc
Trainer

2 years ago
obaydulbc

বাংলা গল্প বউ ডুবির কথা ১



নিঝুম রাত । দেবীপুর গ্রামের নির্জন পথ ধরে এক
খানা পালকি চলছে। পালকিটা জমিদার নীলমণি
বাঁড়ুজ্যের। তিনি পালকিতে আধ শোয়া হয়ে চিন্তিত
মুখে পর্দা সরিয়ে আকাশ দেখছেন, আকাশের অবস্থা
মোটেও ভালো নয়। ভাদ্রের শেষে এ সময়টায় প্রায়ই
প্রচন্ড ঝড় বৃষ্টি হয়। এই অঞ্চলটা পুরোটাই তাঁদের
জমিদারি। পথের পাশে চারদিকে কখনো দিগন্ত স্পর্শ
করা চাষের ক্ষেত। সেই ক্ষেতে ধান ও অন্যান্য শস্যের
চাষ। আবার কোথাও কোথাও আবার ঘন জঙ্গল।
কোথাও ক্রোশের পর ক্রোশ জুড়ে শুধুই বাঁশ বন।
শরতের প্রথমে এ সবই বর্ষার জল পেয়ে পুষ্ট, ধুলো ও
মালিন্য হীন ঘন সবুজ এবং নিবিড়। একই সঙ্গে বড়
রহস্যময়ও বটে। এমন রাতে কোন পথিকের সাধ্য হবে
না একাকী এই পথ ধরে যাওয়ার। এমনকি দু তিন
জনের জন্যও যথেষ্ট বিপদজ্জনক।
জমিদারের নিজের মহলে ফিরতে হলে আরও প্রায়
পাঁচ ক্রোশ পথ যেতে হবে। কালো কালো মোষের
মতো মেঘ সারাটা আকাশ জুড়ে ছেয়ে আছে।
নীলমনির সঙ্গে অবশ্য লোকজনের কমতি নেই, খেটো
ধুতি পরা আর কোমরে গামছা বাঁধা হাতে লাঠি আর
বল্লমধারী দশ জন অতি দক্ষ লেঠেল আছে। আরও
পাঁচজন মশাল নিয়ে চলছে, তারাও কম জোয়ান নয়।
তাদের কোমরের কাছে ধারালো অস্ত্ৰ গোঁজা আছে।
কিন্তু প্রকৃতির কাছে মানুষের ক্ষমতা আর কতটুকু!


ওপরে ঝুলতে থাকা কালো মোষ গুলোকে কে যেন
জ্বলন্ত রুপোর তলোয়ার দিয়ে কেটে কেটে ছিন্ন ভিন্ন
করছে, আর তাদের সম্মিলিত আর্তনাদে যেন চরাচর
কেঁপে উঠছে। চার পাশের গাছ গুলোও আসন্ন ঝড়ের
আশঙ্কায় প্রহর গুনছে। সর্বত্র একটা দমবদ্ধ গুমোট
ভাব। কোথাও কোন শিয়াল বা কুকুরের ডাকও শোনা
যাচ্ছে না। অবলা পশু পাখিরা কোথায় লুকিয়েছে কে
জানে। মশালের আলোয় রাস্তার পাশে বড় বড়
ঝাঁকড়া গাছ গুলোকে দৈত্যের মত ভয়ঙ্কর মনে হচ্ছে।
নীলমণি অনেকক্ষন থেকেই আকাশের দিকে নজর
রাখছিলেন। তাঁর ভ্রু কুঁচকে আছে। এবার তিনি
নিজের খাস লেঠেল ভৈরবকে ডাকলেন,"ভৈরব ও
ভৈরব!"
ভৈরব কর্তার পালকির পাশে পাশেই একটা জ্বলন্ত
মশাল ডান হাতে ধরে হাঁটছিল। নীলমনির ডাক শুনে
পালকির একদম কাছে এগিয়ে এলো , মশালটা হাত
বদল করে বাঁ হাতে ধরে বলল,"আইজ্ঞে হ্যাঁ বড় কত্তা,
বলুন।"
নীলমণির মুখ থেকে ভকভক করে মদের গন্ধ বের
হচ্ছে। সারাদিন প্রচুর মদ খেলেও জ্ঞান এখনো
টনটনে। কিন্তু গলার স্বর জড়িয়ে গিয়েছে। জড়ানো
গলায় চিন্তিত ভাবে বললেন,"কোম্পানি তো এখন অনেক নতুন নতুন রাস্তা গড়ছে, বাড়ি ফেরার অন্য
কোনও পথ জানিস? আকাশের গতিক তো ভালো
ঠেকছে নে বাপু, হটাৎ বৃষ্টি নামলে গ্রামে পৌঁছুতে
পৌছুতে অসময়ে ভিজে একসা হয়ে যাব। ঠান্ডা লেগে
বুকে সর্দি বসে গেলে বহুদিন ভোগাবে। চিনিস অন্য
কোনো পথ?"

এই কথাটা ভৈরবও ভাবছিল। আকাশের দিকে চিন্তিত
মুখে চেয়ে খানিকটা নিরুপায় হয়ে বলল,"কত্তা ক্ষেতে
এখন ভরা ফসল, আর হাঁটু জল। এই আঁধারে দিক
ঠাওর করতে লারব, আল পথে যাওয়াও ঠিক হবেনি।
কত রকম পোকা মাকড় আছে নে?"
ভৈরব এখানকার মানুষ। জন্ম কর্ম সবই গ্রামে। সে
রাতের বেলায় সংস্কার বসত সাপকে পোকা বলল ।
নীলমণি হতাশ হয়ে মাথা নাড়লেন,
"খুব মুশকিল হলো রে! এই হারামজাদা পালকি
বেয়ারা গুলোকে ধরে ধরে জামা কাপড় খুলে চাবুক
দিয়ে চাবকাতে হয়। চার বেলা গাদা গাদা খেয়ে খেয়ে
অলস হয়ে গেছে। নইলে যে সময়ে বেরিয়ে ছিলাম
এতক্ষনে বাড়ি পৌঁছে আরাম করে ঘুমোতে পারতাম।"
বেহারা গুলোর দিকে একবার কটমট করে চেয়ে

ভৈরব বলল,"আইজ্ঞা কত্তা, আর খান উপায় বোধ
করি আছে, আধ ক্রোশ পর বউ ডুবির শ্মশানের ধার
দিয়ে গেলি কোম্পানির বড় রাস্তায় পড়ব, তারপর
বাড়ি যেতি বেশি সময় লাগবে নে।"
যাত্রীদের পুরো দলটাই রাস্তার ওপর কর্তার আদেশে
থমকে দাঁড়িয়েছিল। ভৈরবের কথা শুনে ওদের মধ্যে
দু তিন জন এগিয়ে এল। ওর প্রস্তাবে অবাক হয়ে
একজন ক্ষুব্ধ স্বরে বলল,
"বউ ডুবির শ্মশান! কী কইছিস কী ভৈরব? এত রাতে
কেউ ওই শ্মশানের ধারে কাছে যায়? রেতের বেলায় ও
জায়গার নাম পযন্ত করে নে কেউ আর তুই কিনা
বলছিস ওর পাশ দিয়ে যাবি? পরানের ভয় নেই
নাকি?"

আরও একজন বল্লম ধারী আতঙ্কিত হয়ে বলল, "তুই
কি হেথায় লতুন নাকি? রাত বেরাতে বউ ডুবির নাম
লিতে নেই তা জানিস নে?"
ভৈরব নীলমনির সামনে মুখের আগায় ছুটে আসা
অত্যন্ত অশ্লীল গালি সামলে নিয়ে দাঁত খিঁচিয়ে বলল,
মোরা এত জন লাঠি, বল্লম, মশাল নিয়ে আছি তাও
তোদের এত জানের ভয়! শুনে রাখ, এর পর থেকি
কত্তার সঙ্গে আর কোথাও তোদের যেতি হবে নে।
তোরা সব লাঠি বল্লম ছেড়ে মাগি ...ইয়ে মেয়েমানুষের

মতো চুড়ি পরে ঘরে বসে থাকবি।

এ অঞ্চলে বাঘের তেমন ভয় নেই, মাঝে মাঝে দু
একটা পোয়াতি বাঘিনী বাঘের হাত থেকে ছানা
বাঁচানোর তাগিদে আর সহজ শিকারের আশায়
লোকালয়ে চলে আসে, কখনো গোয়াল ঘরে হামলা
করে। কখনো দু চার জন মানুষও টেনে নিয়ে যায়।
তখন গ্রামের লোক জন এককাট্টা হয়ে পিটিয়ে বা
বল্লম দিয়ে খুঁচিয়ে মেরে দেয়। তবে প্রতি বছর সাপের
কামড়ে অনেক লোক মরে। শীতের মাস গুলো ছাড়া
সারা বছর নানা জাতের বিষাক্ত সাপ সর্বত্র ঘুরে
বেড়ায়। গাঁ গঞ্জে বাস করে সাপের সঙ্গে পেরে ওঠা
কঠিন।

এ সব ছাড়াও অন্য আর এক ধরনের ভয়ও আছে ৷
কিন্তু সে সব ভয় ভৈরবের চওড়া পাথরের মত বুকের
ছাতি ভেদ করে হৃদয়ে প্রবেশ করতে পারে না। তার
পূর্বসুরিরা মৃত্যু নিয়েই কারবার করতো, এরা দেশের
কুখ্যাত ঠগী ছিল। লাট সাহেব কড়া হাতে ঠগী দমনের
পর এখন পেশা বদলে দিনের বেলায় ভাল মানুষের

মতো চাষ আবাদ করে। রাতের অন্ধকারে ওদের রূপ
বদলে যায়। ভৈরবও দিনে নানা রকম কসরত করে,
কুস্তি লড়ে, চাষ বাস দেখে, কিন্তু রাতে সে প্রভুর পোষা
হিংস্র কুকুর। বাঁড়ুজ্যের আদেশে করতে পারে না এমন
কোন কাজ নেই। বরং সে সব কাজেই তার উৎসাহ
আর তৃপ্তি অনেক বেশী।

পালকির ভেতরে মোটা গদির ওপর দুটো মোটা মোটা
জরির কাজ করা ঝালর দেওয়া তাকিয়া, নীলমণি
সেগুলোতে হেলান দিয়ে একটা বিদেশি সূরার ছিপি
খুললেন, সেই সুবাস নাকে যেতেই ভৈরব জিভ দিয়ে
নিজের ঠোঁট চেটে নিল। সেই সঙ্গে অন্যরাও গভীর
শ্বাস টানল। গভীর রাতে পথের পাশের জঙ্গলের গাছ
গুলোর বুনো গন্ধ ছাপিয়ে মদের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ল।
নীলমণি আবার চেঁচিয়ে উঠলেন, "কি হল কি
তোদের? হারামজাদারা এখানেই থেমে থাকবি নাকি!
বাড়ি ফেরার ইচ্ছে নেই? এই শুয়োরের বাচ্চা গুলোর
জন্য পথেই রাত কাবার হবে দেখছি!
ভৈরব বলল, "তাইলে কত্তা বউডুবির পথ ধরি?"
নীলমণি মাছি তাড়ানোর মতো করে নিজের মুখের
সামনে হাত নাড়ালেন।

পুরো দলটা গভীর অনিচ্ছা সহকারে আবার চলতে
শুরু করল। সঙ্গে সঙ্গে যেন এক দুর্ভাগ্য ওদের সঙ্গ
নিল,স্বয়ং কাল আগে হেঁটে হেঁটে পথ দেখিয়ে চলতে
শুরু করল। এতক্ষনের স্তব্ধ হয়ে থাকা বাতাস হটাৎ
সচল হয়ে পথের ওপর শুকনো মরা ঘাস আর ঝরে

পড়া মরা পাতা আর কাঠ কুটোর ছোট ছোট ঘূর্ণি

তুলতে লাগল।


ভৈরব আর নীলমণি ছাড়া সবারই মন কু গাইছিল। কী

এমন হতো একটু দেরিতে বাড়ি পৌঁছালে! পথের মধ্যে

ঝড় বৃষ্টিতে মানুষ পড়তেই পারে। অসময়ে ভিজে সর্দি

কাশি হয় না এমনও তো নয়। তাই বলে এমন রাতে

এই রকম প্রাণঘাতী সিদ্ধান্ত কেউ নেয়!



.............
পরবর্তী পর্ব পড়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন

বউ ডুবির কথা (২) ............



×

Alert message goes here

Plp file


Category
Utube fair

pixelLab দিয়ে নিজের নাম ডিজাইন ও Mocup

Paid hack

App link topup