Forum
24
bd

















1. First of all registration here 2. Then Click on Be a trainer or writer button 3. Collect your trainer or writer id card from trainer master 4. And create post here for earn money! 5. For trainer 100 tk minimum withdraw 6. For writer 500 tk minimum withdraw 7. Payment method Bkash Only
obaydulbc obaydulbc
Trainer

2 years ago
obaydulbc

বাংলা গল্প বউ ডুবির কথা ৫



গাঁয়ের কায়েত পাড়ায় লবঙ্গ বুড়ির কাছে রতনমনির খুব যাতায়াত আছে। লবঙ্গ বুড়ির সদ্য সদ্যই স্বামী মারা গেছে। কিন্তু তার মনে এখন ফুর্তির অভাব নেই। তাকে দেখে মনে হয় স্বামী মারা যাওয়ার পর তার ফুর্তি অনেক গুন বেড়ে গেছে। স্বামী মারা যাওয়ার পরই তেজ দেখিয়ে ছেলেদের কাছ থেকে আলাদা হয়ে ছোট্ট একটা এক চালা ঘরে বাস করছে। সে ঘরের দাওয়া একটু খানি ঘিরে নিয়ে তার এক বেলার অন্নের আয়োজন করে। যেদিন একাদশী পড়ে সেদিন যেন তার আনন্দের আর অবধি থাকেনা। রান্না বান্না, খাওয়া দাওয়ার বালাই নেই। সারাটা দিন হয় পুকুর ঘাটে নয় এবাড়ির ওবাড়ি আড্ডা দিয়ে কাটে।

তার একটা গোপন ব্যবসাও আছে যা খুব কম জন জানে। সেই ব্যবসা থেকে তার আয় খুব একটা কম নয়।

রতনমণি এই ব্যবসার খবর জেনেছিল মালতির কাছে। হাতের আংটির বিনিময়ে জিনিসটা লবঙ্গ বুড়ির কাছ থেকে কিনেছিল, সেটা আসলে কয়েক টুকরো শেকড়। এক গাঁট মতো শেকড় খল নুড়িতে মেড়ে ভোরের সূর্যোদয়ের আগে খেয়ে নিলে অবাঞ্ছিত গর্ভ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। রতনের প্রথম সন্তানের জন্ম হয়েছিল সাড়ে তেরো বছর বয়সে। নয় মাস অশেষ কষ্ট পাওয়ার পর প্রসবের সময় সে জীবনে প্রথম যন্ত্রণার মুখ দেখল। সে যন্ত্রণা যে কী যন্ত্রনা! মরণ বোধহয় তার থেকে ভাল! দ্বিতীয় সন্তানও পরের বছরেই হল। দুটোই ছেলে। তখনও প্রকৃতি তার শরীর সম্পূর্ণ গড়ে তুলতে পারেননি। পূর্ণ রূপে নারী হয়ে ওঠার আগেই স্বামীর সঙ্গে যৌন সংসর্গ ও গর্ভ ধারণ করতে বাধ্য হয়েছিল। ওর অগঠিত অপুষ্ট স্তনে তখন দুগ্ধের অভাব, দুটো বাচ্চাই মাতৃদুগ্ধের অভাবে দিন রাত কাঁদে। জল মেশানো গরুর দুধ দুর্বল শিশু দুটো হজম করতে পারে না, পেটের ব্যথায় কাতরাতে থাকে। ঘ্যানঘ্যানে কান্নার জন্য রতনমণি ঘুমোতে পারে না, দিন রাত গাল পারে, "মর মর, মরিস নে কেন? মরে যা তোরা!"

সন্তানের প্রতি তার বিন্দুমাত্র স্নেহ নেই, বরং মায়ের স্নেহ ভাগ করে নেওয়া সহোদর সহোদরার প্রতি যেমন আক্রোশ থাকে ঠিক যেন তেমনটি ছিল।

পিতামাতার স্নেহের শীতল ছায়ায় যাদের থাকার কথা সময়ের অনেক আগে যদি তারা পুরুষ সংসর্গ করতে বাধ্য হয়, সন্তানের জন্ম দিতে বাধ্য হয় তবে এমনটাই তো হওয়ার কথা। বিশেষ করে রতনমণির মতো বাপের ঘরে থাকা বড় লোকের মেয়ের ক্ষোভ কিছুতেই চাপা থাকে না । তবুও তো তাদের এবং তাদের সন্তানদের যত্ন করার জন্য আলাদা ঝি চাকর থাকে।

তখন মালতির ওপর রতন আর তার সন্তানদের দেখা শোনার ভার দিয়েছিলেন নিস্তারিণী। একদিন নরম কাঁথায় জড়িয়ে নবজাতককে কোলে তুলে মালতি বলেছিল কায়েত পাড়ার লবঙ্গ বুড়ির কথা। তার আগে রতনের নাকের সোনার ফুলটা চেয়ে নিয়েছিল।

যত বড়লোকের বাড়িই হোক না কেন আঁতুর ঘর সব সময়ই অস্পৃশ্য। সে ঘরের পরিচ্ছন্নতার দিকে কারোর কোন দৃষ্টি থাকে না। যে সব অভাগা মেয়ে সে ঘরে এক মাস বাস করতে যায় তারাই জানে সেখানে বাস করার অসুবিধের কথা। বাড়ির মেয়ে বৌদের জন্য সামান্য একটু যত্ন করার কথা তাদের অভিভাবকরা ভাবেন না। তবুও রতনমণি বাড়ির মেয়ে এবং বড়লোকের মেয়ে বলে আদর যত্ন কিছুটা হলেও বেশি পায়। তার মা ভুবনমোহিনী চার বেলা আঁতুর ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে খোঁজ নিয়ে যায়। খোঁজ নেন নিস্তারিণীও। বারে বারে না রকম পুষ্টিকর খাবার পাঠান। যদিও তিনি একবারই সোনার মোহর দিয়ে নবজাতকের মুখ দেখেছিলেন। কবরেজের পরামর্শ অনুসারে আর নিজেদের জানা ঘরোয়া টোটকা হিসেবে কালো জিরে ঘিয়ে ভেজে শুকনো ভাত দিয়ে আগে খেতে হয়। এতে নাকি নাড়ি তাড়াতাড়ি শুকোয়। সন্ধে বেলাতে বাড়ির গরুর খাঁটি দুধ আর সাবু দিয়ে ফুটিয়ে পায়েসের মতো করে বাড়ির গরুর খাঁটি দুধ আর সাবু দিয়ে ফুটিয়ে পায়েসের মতো করে দেওয়া হয়। এতে বুকে দুধ আসবে। কে না জানে শিশুর জন্য মায়ের দুধের চেয়ে পুষ্টিকর এই দুনিয়ায় আর কিছুই নেই। সারা জীবনের জন্য সুস্থ শরীরের ভিত গড়ে দেয় মাতৃদুগ্ধ। ভুবনমোহিনীর তত্বাবধানে রতনমণি একটু একটু করে সুস্থ হয় আর মনে মনে ভাবে আঁতুর কাটলেই আবার তো তরুণ স্বামীর শরীরের ক্ষুধা মিটাতে হবে, আবারও আগামী বছরেই বাচ্চা বিয়োতে এ ঘরে ঢুকতে হবে। ওর মনটা বিষিয়ে ওঠে।

একদিন দুপুরে পেট ভরে দশ রকম পদ দিয়ে ভাত খেয়ে দুর্বল শরীরে একটু চোখ লেগে এসেছিল অমনি বাচ্চা চিল চিৎকারে কেঁদে উঠলো। চোখ খুলে বিরক্ত হয়ে বলল, "হারামজাদা কাঁদছে কেন রে মালতি?"

যারা আঁতুড়ে মা আর শিশুর সেবা করে তারাও ক্লান্ত থাকে। ভাল করে ঘুম হয় না। দুপুরে খাওয়ার পর মালতিরও চোখ লেগে এসেছিল। সে উঠে বসে শিশুর গায়ের আবরণ সরিয়ে পরীক্ষা করে বলল, "তোমার ব্যাটা হেগে ফেলেছে গো রতন দিদি! হেগে মুতে ঠান্ডা লেগে কাঁদছে।" রতন ক্ষেপে গিয়ে বলল, "মার মার, আছড়ে মেরে ফেল!”

চারদিকে চোখ ফিরিয়ে মালতী বলল, "চুউপ রতন দিদি, চুউপ! এমন কথা বলতে নেই, এ কথা কানে গেলে তোমার মা আর মা ঠাকরণ আমাদের দুজনকেই মেরে পুঁতে ফেলবে!"

রতন তিক্ত স্বরে উত্তর দিল, "আমায় মেরে ফেললে তো বেঁচে যাই। ফি বছর আর ছেলে বিয়োতে হয় নে। আছড়ে না মারিস তো মুখে নুন ঠেসে হাঁড়িতে করে কোথাও পুঁতে দিয়ে আয়।"

মালতি এবার গম্ভীর হয়ে বলেছিল, "ছিঃ রতন দিদি, মা হয়ে এমন কথা কেউ মনেও আনে নে। মা ষষ্ঠীর কত দয়া তাই কোল জুড়ে দুটো ছেলে পেয়েছ। কত জন যে একটা সন্তানের হা পিত্যেস করে মরে। আঁটকুড়ো হয়ে জীবন কাটিয়ে দেয়। লোকে সকাল বেলায় তাদের মুখ দেখে নে পর্যন্তি তা জানো?

রতনের গলার স্বর এখনো কিশোরীর মতোই রিনরিনে কিন্তু জীবন ওর অন্তরের কুম্ভে অমৃতের বদলে বিষে পূর্ণ করেছে। সেই বিষ সে সবখানে ঢেলে নিজের জ্বালা কমায়। রিনরিনে কণ্ঠেই উত্তর দিল, "দূর দূর! এ যন্তনা সইবার থেকে আঁটকুড়ো হওয়া হাজার বার ভাল।"

আঁতুর ওঠার দুমাস পর সন্ধে বেলায় মালতির সঙ্গে লুকিয়ে লুকিয়ে গিয়ে আঁচলে গিঁট বেঁধে ওষুধটা রতন নিয়ে এসেছিল। লবঙ্গ বুড়ির আসল নাম লবঙ্গ ললিত লতা শতদলবাসিনী। চল্লিশ বছর বয়সের মধ্যেই কুড়িটি সন্তান এবং অগণিত অজন্মা ভ্রূণের মা হয়েছিল। রতনের আবেদন শুনে কালো কালো দোক্তা খাওয়া দাঁতে হ্যা হ্যা করে হেসে বলেছিল,"মাত্তর দুই ছাওয়ালের জম্ম দিয়েই হেদিয়ে গেলে মা গো! আমার আরও পাঁচ জ্যান্ত সন্তানের জন্ম হলে তেনার সঙ্গে আবার বে হতো। গাঁ গঞ্জের এটাই নিয়ম, পঁচিশ টে ছাওয়ালের জম্ম দিলে নিজের সোয়ামী সঙ্গে আবার বে দিতে হয়। ভাগ্যে এ গাঁয়ের ভিকু ওঝার বেধবা ব্যাটার বউ বুধিয়ার একমাত্তর ছাওয়ালটাকে সাপে কেটে ছিল। তার সোয়ামী আর শ্বশুর কেউই বেঁচে ছিল নে যে মন্তর পড়ে বিষ নামবে। ভাগ্যিস আমার কাছে বিষ পাথর ছিল। বিষ পাথরে সে ছেলের বিষ নামাতে বুধিয়া আমার পায়ে পড়ে জানতে চেয়েছিল কিভাবে আমার উবগারের শোধ দেবে। তা আমার আর কীই বা চাই বল! খাওয়া পরার অভাব তো কোন কালেই ছিল নে। যা চাই তা চুপি চুপি তার কানে সে কথা বলতে অনেক ধানাই পানাই করে শেষে সে একটা গাছ চিনিয়ে দিলে। তার শেকড় সূয্যি ওঠার আগে খল নুড়িতে মেড়ে খেলে পেট খালাস হয়। তা সেদিনের পর থেকে আর আমাকে আঁতুর ঘরের মুখ দেখতে হয়নি কো।

এ ঘটনার ছয় মাস পর যখন রতন আবার গর্ভবতী হল তখন পরীক্ষা করে দেখে খুশি হল। বেশ কয়দিন বিছানা ধরা হয়ে থাকলেও প্রসব যন্ত্রণার মতো প্রাণান্তকর যন্ত্রণা তো ভোগ করতে হয়নি। লবঙ্গ বুড়ি আরও অনেক কিছু শিখিয়েছিল। পেটে শত্তুর এসেছে কিনা জানার জন্য ফলন্ত ফুলন্ত গাছের গোড়ায় মূত্র ত্যাগ করলে সে গাছ যদি মরে যায় তাহলে কোন চিন্তা নেই, কিন্তু সে গাছ যদি আরও ফলে আর ফুলে ভরে ওঠে তবে সে এসেছে। কচি কচি মেয়ে গুলোর ছোট্ট শরীর যন্ত্রনায় মথিত করতে সে আসছে। লুব্ধ পরপুরুষের শিকার অসহায় বাল্য বিধবার সন্মান ধুলোয় লুটিয়ে দিতে সে আসছে।

মানব শিশু। তার আগমন সর্বদা আনন্দের হয়না, সর্বদা বাঞ্চনীয় নয়।

কিন্তু রতনমনির স্বেচ্ছায় এই গর্ভপাতের কারণ কবরেজ মশাই বুঝে গিয়েছিলেন। সব বিষেরই একটা প্রতিক্রিয়া হয়। যা চিকিৎসকের কাজ তা আনাড়ি লোকের হাতে পড়লে প্রাণঘাতী হতে পারে। কবরেজ মশাই নীলমণিকে আড়ালে নালিশ করেছিলেন। কন্যার এই কর্মে নীলমণি ক্ষুব্ধ হননি, বরং বংশ বৃদ্ধি রোধ করার পদ্ধতি আছে জেনে চমৎকৃত হয়েছিলেন। সঠিক সময় সঠিক স্থানে এর প্রয়োগ করার দরকার হতে পারে।

কন্যার গতিবিধির ওপর নজর রাখতে লোক নিযুক্ত করলেন।

ক্রমশ


............
পরবর্তী পর্ব পড়ার জন্য অপেক্ষা করুন

বউ ডুবির কথা (৬) আসতেছে............


×

Alert message goes here

Plp file


Category
Utube fair

pixelLab দিয়ে নিজের নাম ডিজাইন ও Mocup

Paid hack

App link topup